বাক্‌ ১৫১ ।। অনিকেশ দাশগুপ্ত


 

নদীর এপারে

 

লাল মেঝের আঁচলে

              জড়িয়ে রইল আবছায়া বিকেল

মেঘ বাড়ে,আঙুল তুলে দেখায় অতিক্রম

জলের শার্সি, পৃথিবীর সবুজ ম্লান দোটানা

 

যুবতীর উপুড় আহত হ্যারিকেন

                      ধোঁয়ায় মিশে যেতে

রাত্রির কল্যাণ দ্বীপে এখন কেউ নেই ঘরছাড়া

শস্য-কুড়োনো খেলায় কেউ নেই

মাছের ধীর নিশ্চিহ্ন ধ্যানে ঝুঁকে আছে

                       জন্মকালের আলো

 

 

 

 

অপহৃত

 

অন্ধকারের বিরাট পাতা

                সে পড়ল গতজন্ম থেকে

কালচে রক্তের গায়ে চাঁদের বিবরণ ছেড়ে

দানবীয় সিঁড়ির ঘোরে একভাবে চেয়ে রইলাম

 

সঙ্ঘের আলাপচারিতা থেকে অস্ফুট ঘোড়াগুলি

তুষার-রশ্মির ভেতর

শোক-গ্রহণের জনপ্রিয়তা রেখে গেল

 

অসংখ্য টেবিলের তোলপাড়

                  ওক গাছের চৌচির আকর্ষণ

নক্ষত্রের চেনা বোতামখানি রে অলৌকিক সমরে যাব

স্বপ্নের কবোষ্ণ মঞ্জরি গেলে দিই বিমর্ষ স্তনে

 

অনেক চূড়ার নিঃসঙ্গ কাচে ক্ষণিকের স্পষ্টতা খোঁজা

লক্ষ্য-মগ্ন পাখিটিকে সাদা অসমাপ্ত ইঙ্গিতে তীব্র করি

রুনু-রুনু ধ্বনির ব্যালকনি ফোকরে উপচে ওঠে

সপ্তর্ষি ফ্রক, লাল-নীল-হলুদের ইস্তাহার

 

 

 

 খাদ

 

অন্ধ তুলির গায়ে সূর্যাস্ত-নারীর দংশন 'রে পড়ে

দুবেলার প্রবল ঘৃণা ছুঁড়ে দেওয়া মধ্যাকাশ

 

হাতের চেনা বাস্কেট, অতৃপ্তির বিভূতি চোখের তলে

শস্যগোলার নিটোল ভ্রম দ্যাখে কেউ নেই

 

অরন্ধন কর্মশালার সঙ্গীতে

মাঝনদীর জানালায় চুপিসারে চমকিয়ে ওঠো

 

ঘামের বিন্দু করুণার ঘাসে বিহ্বল ড়ে থাকে

আশ্রমের নিঃসীম লাল বেণি, চন্দ্রলতা,

কেঁপে ওঠা শালুক-ঋতুর মিলনোদ্যত সেতু-আঁশ

মিলিয়ে গেলে এক ফুঁয়ে

 

 

 

 

ক্ষমা

 

মুখ ঝুঁকিয়ে যতদূর দেখা যায়

কুয়াশাময় গাছের নিচে

এঁকে মুছে দেওয়া প্রথম জলের বেড়

 

দুজনে দাঁড়িয়ে দেখা অন্ধ মানুষ

ট্রেনের ম্লান কান্নায় ঢাকে তার দোতলার বারান্দা

আঙুলে গোনা উল্কির তেজ

                      মৃত্যুর নিষিদ্ধতায়

হাতে ডোবানো আগুন

একদিন সত্যি তে চেয়ে ঘর বদলায়

 

 

 

 

 

তীর্থ

 

 

ডানা নেই, সিদ্ধপুরুষ, আনত আঙিনায়

যৌনাতুর শিশিরে সমাহিত আঙুলে

সুতো বোনার নিঃসীম হিম গলে

অপ্সরী কানে শোনায় দীর্ঘ দ্রাঘিমা,

সময় গির্জাসুদ্ধ স্নিগ্ধ দীক্ষিত পিপুলের ধার বেয়ে

অকূলের পিরিচ খসে, ‘ডায়াসের সবুজ শোকতাপ

এই পরিচালক ভিত উঁচু টিলার দিনে

নিজ স্তনের বিভায় আঁতকে উঠি, হয়তো সৃজন স্ত্রীচক্র,

সুতো বাঁধা দারু-পৌরুষ তাকে ফিরিয়ে দেয় জল

আনত মুখ, অপর শৃঙ্গের মিনতি

 

No comments:

Post a Comment