বাক্‌ ১৫১ ।। তমসা অরণ্য

 

নিকট নিকট দূরত্ব

 

তোমাকে তুলে ধরেছি আমি; এই দ্যাখো!

যেই তুমি পড়ে গেছো, ঝরে গেছো, নড়ে গেছো, ভেঙে গেছো;

হয়ে গেছো গুঁড়ো গুঁড়ো;

চুর।

 

তুমি আমার সতীর্থ হও।

আমরা পা ঝুলিয়ে বসবো জ্যোৎস্না দিনে-

ছাদের বেদিতে, নৌকার গলুইয়ে কিংবা টিএসসিতে অথবা ক্যান্টিনে;

মধুর!

 

আমাদের বেদানাবদ্ধ বেদনায় মিল,

আমাদের একই পথের এক কোণে একা বাড়ির দোরে আঁটা খিল,

আমাদের চিপাচাপায় অহরহ চাপ খাওয়া দিল-

সানাই আর বেহালার বিবাদে বাজায়ে যায় বিউগুলে

সুর।

 

তোমাকে তুলে ধরেছি আমি; এই দ্যাখো!

আয়নাবর্তী হও; নোটস্থ করে নাও যা কিছু;

প্রয়োজনে বারংবার ল্যাখো ল্যাখো ল্যাখো-

আমাদের মাঝে কেবল আমি আর তুমি সম

দূর।

 

 

 

 

 

আস্তিন-ওড়নার মাস্তান সাপের খেল

 

তোমার গুটানো আস্তিন থেকে খসে পড়ছে কৈশোর।

আমার খসে পড়া ওড়নায় গুটিয়ে যাচ্ছে যৈবন।

আমাদের চোখ পরস্পর হস্তমর্দনের ভঙ্গিতে

হৃদিশোভা বর্ধনে মনোযোগী।

আমাদের মন খুঁজে নিচ্ছে নির্জন কোণ।

আমি-তুমির চামড়া খসে গিয়ে

আমরায় লেগেছে কী দারুণ ঘোর!

 

গুটানো আস্তিন থেকে খসে পড়ছে গুটি গুটি কৈশোর।

খসে পড়া ওড়নায় গুটিয়ে যাচ্ছে ঝুঁটিবাজ যৈবন।

বাহিরের লোক ভেতরের ইহাদের কী করে,

কী করে করবে গ্রহণ?

 

 

 

 

বন্ধনের স্পন্দন এবং নাড়িনক্ষত্র আবিষ্কার: একটি অপপ্রয়াস

 

পৃথিবীতে খাদ্যকণার সাথে খাদকের যে প্রেম তাই আদি।

আমাদের তো কেবল প্রাদি কিংবা সুপসুপা সমাস হয়ে বেঁচে থাকা।

মানুষ অধিকাংশই নিজস্ব দাদির তাদের দাদিকে চেনে না।

তবু ঘর-দোর-বিছানা এবং নিজস্ব মানুষ আঁকড়ে রাখতে চায়।

ভাবে, এই তার ঠিকানার অধিকেরও বেশি ঠিকানা।

 

 

 

 

শিকারিও একদা শিকার ছিল

 

অনিবার্য পাদের মতন ফাঁদ পেতে বসে যে মানুষ মুখ,

সেও একদা হাত ধরে কাঁধের পাশে কাঁধ রাখবার চেয়েছিল খানিক আশকারা।

কিন্তু দাঁত বসিয়েছিল যক্ষুনি

সর্প কিংবা সাপিনী,

তক্ষুনি থেকে

মানস দ্রানস হয়ে গিয়েছিল মারা।

এখন শুধুই সে মুখ মুখোশে পড়েছে ঢাকা।

অনিবার্য পাদের মতো প্রতিবার ফাঁদ না পেতে তাই,

তার যাচ্ছে না থাকা।

 

 

 

 

ট্রাজিক রোমান্স বটে

 

কবি বলেছেন- প্রেম করো।

জনতা পয়দা করিবার মচ্ছবে সামিল!

তাই এখন আর ডালিম কুমার কাহিনি নাই।

মলমিশ্রিত নালি, ড্রেনের পাশ, নির্জন চিপা,

রাস্তার ধার ইত্যাদি ইত্যাদি আঁতকাই

মৃত্যুর কোন্দলে খাড়ানো মিছিল।  

 


No comments:

Post a Comment