পৃথিবীর শেষরাত্রি
কোথাও উন্মাদ-আশ্রমে শাদা ভোরবেলা চা পাতার ঘ্রাণে
ভেসে যায় চরাচর। অদূরে কফিনের ডালা হাঁ করে থাকে চিরদিন। মহিষের স্নান শেষ হলে জলা
আর রোদের ভিতর, তারপরে
যে-শোলক ঘুরে মরে, আরো গুমোট হাওয়ার ভিতর ভিজে যায়। আমি
পুড়তে পারি না, আমি উড়তে পারি না। সেই যে অতিকায় ডানাঅলা গাছ,
যে ছিলো জানালার ওপারে একশো তিরিশবছর, আমি
ভুলে যাই, ভুলে যাই লবণ ও লবঙ্গের দিন। আরাধ্য হরিণের
পদচ্ছাপে ফুরিয়ে গেলে ক্ষত জেগে ওঠে বনে। আমার উন্মাদ প্রেমিকা এসে আমাকে দুহাতে
জড়িয়ে ধরে চুমু খায়, শ্বাসরুদ্ধ চুম্বন। তার হাতে ধরা দৃশ্যের
করাত আমাকে ফালি ফালি কাটে, দুরন্ত ছাতিম আর তার ঘ্রাণ। সে
আসে ছাতিমের বন ভেঙে, তার কাঠ চিরে মৃগঙ্গ বাজে অপরূপ
দাবানলে। আহা আকুল হয়ে কেঁদে যায় অদূরে জানালা দিয়ে দেখা পাহাড়ের গাছবন। যারা
নৃত্যরত, তারা সমূহযুদ্ধের বিপরীতে আকাশটাকে পাপড়ের মতো নিয়ে
ইস্কাপন বানায় কানায় কানায়, মুঠোর ভিতর। আর আমি মরে যাই ধীরে
আমার সেই প্রাণাধিক উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের ভিতর।
অভাজনের প্রাণ সে রাখালিয়া বাঁশি—উথল শৃঙ্গারের কালেও কাঁদে। তার রোদনের
ভিতর ঘুঘুপাখিরা জীবনদাশের কবিতার পঙ্ক্তি ভেঙে পশ্চিমে সরে গিয়ে সূর্যের গায়ে ঢলে
পড়ে—আমি শুনি পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে কাঁঠালের বনে,
পৃথিবীর সব হুহু কাঁদিতেছে আমাদের মনে। এইসব দৃশ্য দেখে দেখে ক্ষয়
হয় দৃষ্টি। হাঁটতে হাঁটতে দুই চোখ খসে পড়ে রাস্তায় কুড়িয়ে নিয়ে আবার রাখি চোখের
দুই কোটরে। চোখে স্মৃতি জেগে ওঠে ভাদরের রাতে পাহাড়ের ধারে। মনে পড়ে সেই কারো
শরীরে ছিলো ছাতিমের ঘ্রাণ, যেই ঘ্রাণে আমি মরে যাই এক হাজার
তিনশো কুড়ি মিনিট। রক্তলগ্ন রুদ্ধশ্বাস চুম্বনেরা সব বৃষ্টিদগ্ধ লাল হলে আমার মনে
হয় সেই পাহাড়ের ধার ছিলো পৃথিবীর একমাত্র ঘর, এই জেনে আমি
মরে যাই আমার সেই উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের ভিতর।
আমি তো কারো হাতে দিইনি প্রিয়তম কথার রুমাল, নিইনি কোনো কথাগীত রাত্রির বকুল। চোখের
ভিতর বাঁধিনি বিহ্বল সেতুর ছায়া, ছায়ারূপ হরিণ, যে-হরিণের পায়ের খুরে কুসুমের ক্ষত। ক্ষতের ভাঁজে ডুবে গেছে অভিমানী
মহিষের প্রেম। কেউই ছিলো না আলোর সমীপে। আমি ছিলাম। আমি ছিলাম। এই যে আছি, চির যাচিত প্রেম। কেউ কুড়িয়ে নেবে এই কামনায় চুপচাপ ডাকি, ‘প্রিয়তম প্রেম, আসো’। যে আসে,
সে আসে না, শীতল পাথর আসে। আমার উত্তরের ঘর,
আমার উত্তরের জানালা, আমার উত্তরের হাওয়া,
আমার উত্তরের পাহাড় সমস্ত আমায় ঘিরে রাখে। তারপরও পুড়ে পুড়ে শীতল
পাথর। বরফ হতে পারি না বলে যাই না গলে। গাভীনক্ষেতের পাশঘেঁষে গোরুটা দাঁড়ায়।
স্ফিত তার সঘন ওলান—দুগ্ধস্রাবে ভাসে সকল দিন আর রাতের
বিভেদ। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তে শাদা সব লাল। সবুজকে খায় শাদা, শাদাকে লাল। কেউ কারো জন্যে থাকে না। সে ঝড় নয়—ঝড়ের
বাহন। স্তব্ধ সকল আকাশ তারপর, আমি ঘুমে ঘুমে মরে যাই ধীরে
আমার উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের ভিতর।
ঘুমরহিত ঘুমে স্বপ্ন ছিলো পরিব্যাপ্ত। যাকিছু
দৃশ্যমান ভাবি সারাক্ষণ গাছটির দিকে চেয়ে—গাছের ডালে স্বপ্নের পাতা পত্রপল্লব। স্তব্ধ তারায় কারো মুক্তি মেলে না।
ওই সুর মহাশূন্যকে আহ্বান করে এই গহ্বরে। গহ্বর আমার চোখের নিষ্প্রভ শহর, পরিব্যাপ্ত হয়েই থাকে। বাকি থাকে ঘুমের নিশ্চুপ প্রতীক্ষা। আমরা মুহূর্তের
জন্যে থাকি, থেমে হাসি, হাত ধরি,
গান গাই। বন খুব দীর্ঘ একা। আমরা আর তিনটা কুকুর। আর অদূরে হরিণের
ভিতর হরিণ, লুকোনো চপল। বুনোফলের দেশে আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি—নিজেদের ভয়ে। নদীর ওইপারে যাই, চা খাই, বসি, হাত ধরে হাঁটি, অন্ধকার
করে দেয় নিভু নিভু সন্ধ্যা। তারপর গোলাপচেরা রাতে শেষঘরে তার পথ ফুরনো পায়ের পাতায়
ঢেকে নিই আমার মুখ—চিরতৃষ্ণায় কাতর ওষ্ঠাধর। এইভাবে আমি মরে
যাই ধীরে আমার সেই উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের ভিতর।
রুদ্রাক্ষের একটি মালা তার প্রতীক্ষায় ঝুলে ছিলো
বহদূর মন্দিরে ছিন্নমস্তার গলায় নিদারুণ একা। সেও জেনে এসেছে পাতার বর্ণিল রং, লাল আর হলুদ পাতার শিরায় বয়ে যাচ্ছে
পৃথিবীর প্রাণ। জেনেছে কী মুদ্রায় মীনদল সন্তরণে বাজায় অলোক ঘুঙুর। চোখের ভিতর
কেমন করে টলটলে দিঘি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় চিত্রল হরিণ তাও জেনেছে। জলের পরতে স্পর্শ
এঁকে নদীকে করে সে মহিমাময়। এইভাবে প্রতীক্ষায় থাকি আমরা জন্মান্ধ পথগুলির বুকে
পায়ের রেখা লিখে ঘুরে বেড়াবো বলে। সমুদ্রের পিঠেও ছাপিয়ে দেবো আমাদের পায়ের পাতা,
চল্লিশটি আঙুলে বাঁধা নখের আয়নায়। পায়ে পায়ে হেঁটে পেরিয়ে যাবো সকল
বন্দর আর পানির স্তর। আর আমি ডুবে যাবো ধীরে আমার সেই উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের
ভিতর।
যে-পাপ গীত আমাদের নখপত্রালিকায়, যে ভাদর ভস্ম হয় আমার হাতে—আমি খুব ধীরে তাদেরই সঙ্গে বাড়ন্ত দুপুরের জিভে অস্থির, অনতিদূর পথের কার্নিশে চকচকে বালি হয়ে থাকি। ওরা বিড়ম্বিত পদচ্ছাপ খুঁজে
ফেরে। আর আমার নখপত্রে ছায়াছবি হয়। আকাশ ধসে পড়ে হাতের আঙুলে। আঙুল শালবন অন্ধকার
ছুঁয়ে অস্ফুট সুখ। কেউ দুর্বিণীত আঁখিঠার নেয় চোখে। কামনার একফোঁটা চুলে লাবণ্য
ঝরে। লাবণ্যের ধামে ঝিমঝিম সন্ধ্যা। সন্ধ্যা যে-নৈশব্দকে প্রশান্ত করে—সে ধোঁয়া ধোঁয়া ভাঁটফুলের গন্ধে উন্মাতাল। খসে পড়া উত্তরীয় আঙুলে জড়িয়ে
মিহিন সুতার কারুকাজ বুঝি। মসলিন বিলাবলে সারেঙ্গী বাজে। তার স্বরলিপি লেখা থাকে
চোখের কাগজে। আমাদের ঘিরে আবর্তিত হয়ে পৃথিবীর শেষরাত্রির সকল প্রেমের অক্ষর। আর
আমি মরে যাই ধীরে আমার সেই উন্মাদ-প্রেমিকার রক্তের ভিতর।
অন্তহীন তৃষ্ণার কাল
আমিও দীর্ঘ পা টেনে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কোনোদিন। আমার
পা এতোই দীর্ঘ যে, সূর্যের
কাছে চলে গেছে। অবলীলায় সেই পায়ের পাতা ঢেকে দিয়েছে সূর্যের মুখ। ফলে ভোর হচ্ছে না
আর তোমাদের পৃথিবীতে। যদি আবার ভোর চাও, আমাকে সশব্দে জাগাও।
আমি রাত্রির নেশায় রাত্রি খেয়ে চুর।
আমি রাত্রি খাই।
রাত্রি আমার পেটের ভিতর ঢুকে যায়,
আমিও নিজের পেটে ঢুকে যাই
আর রাত্রির হাত ধরে হাঁটি আর হাঁটি।
রাত্রি আমার ভাই।
চারকোলে এঁকে রাখছি রাত্রি। আলুথালু রাত্রি এঁকে
টাঙিয়ে রাখছি মশারি। এক হাজার এক রাত্রি এঁকে বুক ভরে শ্বাস নেবো। তারপর নিজেকে
আঁকবো রাত্রির পেটে। তারপর গাঢ় নীল বা®প হয়ে ফুরিয়ে যাই। তারপর প্রতি রাত্রির মতো মধ্য রাতে আকাশ ঘেঁটে দিতে
যাই। তুমিও আসতে পারো চাইলে। সঙ্গে বাটি নিতে পারো একটা। বাটির সঙ্গে একটা চামচ।
মহাকাশে স্যুপের দোকান দিয়ে বসবো। গরম গরম স্যুপ বিক্রি করবো পরী ও বৃহন্নলাদের
কাছে। তারা আরাম করে খাবে আকাশগলা সেই আশ্চর্য স্যুপ। তার সঙ্গে মিশিয়ে দেবো হালকা
মেঘের চূর্ণ, পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া পুদিনার পাতা ও
লেবুঘাস। আর মহাকাশে ধৃত একচক্ষু ঈশ্বরের চোখের কয়েকটা মায়ারী হাড়। তুমিও আসতে
পারো বাটি হাতে। সেই স্যুপ খেয়ে আমরা মহাকাশেই উথল শৃঙ্গারে বুনে দিব নিশ্বাসের
বীজাণু। সেই বীজাণু থেকে জন্ম নেবে যে-আনন্দ, তার সঙ্গে
পরীদের বিবাহ দেবো। বিবাহ উৎসবে নাচবে আর সব বৃহন্নলা দল, কল
কল কল কল।
তক্ষক ডেকে ডেকে রাত্রির ভয়—
ধক ধক বুকে তবু কারো নাম নয়।
একা খোলা রাতের জানালা উজাড়,
হুহু হুহু বায়ুপিঠে ঢুকে পড়ে জাড়।
ঘরহীন বাড়ি কাঁদে জুনিপোক জ্বেলে,
বুকের অনলে খাক রাতখেকো ছেলে।
আকাশ ঘেঁটে দিতে যাই। চাইলে তুমিও আসতে পারো দেখতে
ভীষণ ব্যাপার, যথা কেমন করে
প্রতিদিন স্যুপের বাটিতে আদাকুচির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাসে ঈশ্বরের চোখের মায়াবী
হাড়। এইভাবে প্রতিরাতে একটা রাত্রি পার হয়। আরো পৃথিবীর অন্য রাত্রি ঝুলে থাকে
দৃশ্যলোকে। অভিমানের রাগ বাজে মাছের কানে। আমি শুনি। একটা রাত্রি পার হয়ে যায়। অন্যরাত্রি
হাঁ করে থাকে। মৃত্যু আনে না, আনে না জীবন। পাগলের গানে
স্বরবিতানও মেঘডম্বর। গাছের মাথাভর্তি সবুজ চুল মুঠি করে ধরে। মেঘের শাদা হাত
গাছের চুল টেনে ঝরনা বানায়। সাতস্বর সাতসুরে ভাসে মাটি ও মৃত্তিকা। কোন গোলার্ধে
ভাসে! উজ্জয়িনী হাসে। নন্দিতা হাসে লাল। শুধায় কুশল, শুধায়
কালিকাপুরাণ, উদ্ভ্রান্ত প্রাণের রূপান্তর। মাটি লজ্জা পায়।
ঝুলে থাকা রাত আসে।
এমন রাতে আমি কারো দরজা ধাক্কাই। সে দরজা খুলে
দাঁড়ায়। তার গায়ে জড়ানো থাকে ঘোর অন্ধকার। আমি অস্ফ‚টে বলি, ‘পানি খাবো’।
সে গ্লাস ভর্তি করে পানি এনে দেয়। আমি গ্লাস খালি
করে ফেলি মুহূর্তেই, দীর্ঘ
এক চুমুকে। আর বলি, ‘পানি খাবো’।
সে পানি এনে দেয়। আমি বোতল খালি করি। তৃষ্ণা যায় না।
আরো বাড়ে। বাড়তে বাড়তে ফুলে ওঠে। সে আরো পানি এনে দেয়। আমি পানির ফিল্টার কাত করে
গলায় ঢেলে দিই।
‘পানি খাবো’।
সে পানির কলের মুখে লাগানো একটা পাইপ এনে আমার মুখে
দেয়। আমি ছাতের দিঘলব্যাপ্ত জলাধার খালি করে বলি, ‘পানি খাবো’।
সে ওয়াসার লাইন থেকে একটা নল এনে আমাকে দেয়। আমি
শহরের সমস্ত পানি খেয়ে শেষ করে ফেলি। নদীর দিকে যাবো কিনা ভাবি। ততক্ষণে শহরের
রাস্তায় মিলিটারি নেমেছে। নদীর পাড়ে ব্যারিকেড দিয়ে বসে আছে। ভয়াল সব এমজি তাক করে
আছে অদৃশ্য শত্রুর দিকে। আমি মনে মনে হাত বাঁধি—
হাত বাঁধি বন্ধনে, তৃষ্ণার নীড়
তৃষ্ণার ঘ্রাণ ছুঁয়ে পুষ্পের ভিড়
ফুল খুলে দুজনে গান গেয়ে যাই
গান খুলে দুজনে জীবন সাজাই
এ জীবন ভরে ওঠে সুমধুর সুরে
তৃষ্ণার হাত ধরে যাই বহুদূরে।
তৃষ্ণায় আমার প্রাণ গলায় আটকে আছে। আমি খুঁজছি আরো
জলাধার। আরো লাবণ্যরহিত সমুদ্র, আরো নদী ও কল্লোল। দোকানপাট, সুপারমার্কেট সব বন্ধ।
নালানর্দমা শুকিয়ে চেলাকাঠ। চাঁদের গায়ে লেগেছে নতুন কলঙ্ক, হলুদ
হয়ে গলে পড়ছে রাস্তায়। আমি ঘুরছি, পা আটকে যাচ্ছে গলে পড়া
চাঁদের পাঁকে।
কোথাও পানি নাই,
কোথাও জল নাই। যেন বা সাফা-মারওয়ায় আমিও খেলছি সপ্তপদী খেলা,
পদাঘাতে জন্মে দেবো অনন্ত নহর। আমি ঘুরে ঘুরে তার দরজায় টোকা দিই
আবার। সে দরজা খুলে আমাকে ঘরে ঢুকতে দেয়। তার পরনে দেখি বিশদ জোছনা। আমি বলি,
‘পানি খাবো’।
এইবার সে নিজের হাতের শিরা কেটে দেয়। আমি তার শিরা
থেকে লেলিহান রক্ত খেতে খেতে তাকে নিঃশেষ করে দিই। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে শাদা হয়ে
যায়, তারপর পলকা তুলোর মতো
মেঘ হয়ে আকাশে দিকে ভেসে যায়। আকাশের গায়ে লেগে কালো, ঘোর
কৃষ্ণবর্ণ হয়ে যায়।
আমি চোখ বুজে দেখি রূপকথার দমোদর সন্তরণ শেষে ঈশ্বর
বসে থাকে ল্যাম্পপোস্টের নিচে, লিখে ফেলে বিদ্যাসাগর, লিখে ফেলে বর্ণ পরিচয়। তারপর
সেই একজন ঘোরকৃষ্ণবর্ণ মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়ে নামে। ধূলির গন্ধ জানালার গায়ে দেয়
ধাক্কা। আমার জানালার কাচ ভেঙে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে আকাশভাঙা বৃষ্টি। প্রবল
তৃষ্ণায় আমি বৃষ্টির জল খেতে থাকি। ঘর খেয়ে আকাশে মুখ বাড়াই, দীর্ঘ জিব উড়িয়ে, হাঁ করে আকাশ থেকে পতিত সকল বৃষ্টি
গলাধঃকরণ করি। তারপর জিভ দিয়ে চেটে আকাশকে বানিয়ে দিই খটখটে পাথর। পাথরের নাভীতে
জিভ রেখে আমি ভাবি ইয়াজুজ-মাজুজ ভাইয়েরা যেদিন সকল নদীর জল খেয়ে শেষ করে ফেলবে,
নলক‚পের নলে চুমুক দিয়ে যখন মাটির নিচের পানিও
শেষ করে ফেলবে, ফল আর উদ্ভিদের ভিতরকার রস সব শুষে নিবে,
লুট করবে নারী ও পশুর উর্বর উলান, গ্রাস করবে
সকল মদের গুদাম, পৃথিবীতে তখন পানযোগ্য আর কোনো পানি থাকবে
না। কেবল থাকবে নোনাজল, সমুদ্র আর মানুষের চোখে টলোমল।
সমুদ্রের জলে লবণ বেশি হেতু মানুষ সেই পানি পান করবে না। ফলে প্রবল তৃষ্ণায় মানুষ
পরস্পরকে যন্ত্রণা দিয়ে কাঁদাবে। আর পরস্পরের চোখের জল পান করবে। তারপর একদিন
মানুষের চোখের জল ফুরিয়ে যাবে। তখন তৃষ্ণাতুর মানুষ পরস্পরের রক্ত খাবে।
লানত! সেই কালের প্রতি, যেই কাল এলে মানুষের চোখের জল ফুরিয়ে
যাবে।
darun
ReplyDeleteচমৎকার
ReplyDeleteচমৎকার।
ReplyDelete